নবী কারীম (সা:) এর বরকতের একটি গল্প
আসসালামু আলাইকুম ওয়া-রহমাতুল্লাহ। স্নেহের প্রিয় ছোট্ট মনিরা সবাই কেমন আছো ? আশা করে সবাই ভালো ও সুস্থ আছো! আজ আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করবো নবীজী সা: এর বরকত ও মোজেজা সম্পর্কে প্রকাশিত ছোটদের ইসলামিক গল্প । (Chotoder Islamic Golpo)
আচ্চা কথা দীর্ঘ না করে চলতো শুনি!! সকল নবীদের শ্রেষ্ট নবী মুহাম্মাদে আরাবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সা: এর এক সত্য মোজেজা ও বরকতের ঘটনা।
বলো তো দেখি! যদি তোমাকে তোমার আব্বু বলেন! যদি তুমি আমাকে একটি চকলেট দাও। তাহলে আমি তোমাকে এক কৌটাভর্তী চকলেট দিব!
তখন তুমি কি করবে? খুশিতে কেমন আত্মহারা হয়ে পড়বে? অবশ্যই তুমি তোমার আব্বুকে খুশিতে একটি চকলেট দিয়ে দিবে। এক কৌটা চকলেট পাওয়ার জন্য, তাইনা?
হুম!! ঠিক এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিলো নবী কারীম সা: এর যুগে সাহাবায়ে কেরাম ও নবী কারীম সা: এর মাঝে। নবম হিজরীর রজব মাসে তাবুকের যুদ্ধের সময়। যেখানে নবী কারীম সা: এর সত্য মোজেজা ও বরকতের একটি নিদর্শন প্রকাশ পেয়েছিলো।
ইসলামের ইতিহাসে নবী কারীম সা: ও কাফেরদের মাঝে যতগুলো গাজওয়া/যুদ্ধ হয়েছিলো। তার মধ্য হতে তাবুকের যুদ্ধ ছিলো সবচেয়ে কঠিন ও দূর্ভিক্ষময় যুদ্ধ।
এই যুদ্ধের সময় মুসলিমদের খুব অভাব-অনটন ছিলো। যুদ্ধের সরান্জাম (তরবারী/তীর-ধনুক/বল্লম/ঘোড়া/উট) ও খাবারের ছিলো খুবই সংকট।
মুসলিমদের যান-বাহন ঘোড়া ও উট ছিলো হাতে গোণা অল্প কিছু! পথের দুরত্ব ছিলো দীর্ঘ। তবুও নবী কারীম সা: সাহাবায়ে কেরাম রা: কে নিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে পড়লেন।
এবং এই যুদ্ধে নবী কারীম সা: তাবুকের উদ্দেশ্যে রাওয়ানা দেওয়ার পূর্বেই যুদ্ধাস্থানের নাম ঘোষণা দিয়ে সকলকে প্রস্তুতি নিতে বলেন।
যা ছিলো সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম পন্থি, কেননা তখন সে সময় আরবে দুর্ভিক্ষ ও ফল কাটার সময় ছিলো। যার ফল স্বরুপ সকলকে তার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ও সরন্জাম নিয়ে বের হতে বলেন।
সাহাবায়ে কেরামের ত্যাগ ও মহিমার ফলে ও নবী কারীম সা: এর বরকতে আল্লাহ তা’য়ালা মুসলিমদের সাহায্য করেন এবং বিজয় দান করেন। এবং এই যুদ্ধেই ঘটে ছিলো এক আশ্চর্য ও বরকতময় কাহিনী, নিম্মে তা উল্লেখ করা হলো।
ছোটদের ইসলামিক গল্প | নবী সা: এর মোজেজা ও দোয়ার বরকত
(Chotoder Golpo) মোর ছোট্ট মনি তাহলে এখন আমরা শুনি নবী কারীম সা: এর সেই মোজেজা ও বরকতের কাহিনী।
যেখানে নবী কারীম সা: এর দুআর বরকতে সামান্য খাবারে অনেক বরকত হয়েছিলো। হুবহু ঐ একটি চকলেটের বিনিময়ে এক কৌটা চকলেট দেওয়ার মত!
ছোটদের ইসলামিক গল্প
নবম হিজরীর সেই তাবুক যুদ্ধ, যাতে অংশ নিতে মুসলমানদের পাড়ি দিতে হয়েছিলো দীর্ঘ পথ। আর খাবার ছিলো খুবই অল্প, ফলে কিছু পথ পাড়ি দিতেই খাবারের সংকট দেখা দেয়।
নবী কারীম সা: ও সাহাবায়ে কেরামের ক্ষুদায় কষ্ট হতে লাগলো। এবং সকলে ক্ষুদায় কাতর হয়ে পড়লে।
সাহাবায়ে কেরাম রা: নবী কারীম সা: এর দরবারে হাজির হয়ে আরজ/অভিমত পেশ করলেন।
যে, হে! আল্লাহর রাসূল সা: আমরা সকলেই ক্ষুদায় কাতর! খাবারের খুবই সংকট! আপনি অনুমতি প্রদান করলে আমরা কিছু উট জবাই করে খাওয়ার ব্যবস্থা করতাম।
তখন নবী কারীম সা: এই কথা (বাহন কমে যাবে, যুদ্ধের উদ্দেশ্যে সামনে যেতে কষ্ট হবে) জেনেও তাদেরকে কিছু উট জবাই করে খাওয়ার অনুমতি দান করেন।
কিন্তু কি করার !! ক্ষুদার্থ থাকার কষ্টের চেয়ে আর কোন বড় কষ্ট আছে কি? তাই নবী কারীম সা: ও সাহাবায়ে কেরামদের রা: অনুমতি দেন।
এই খবর হযরত উমর রা: শোনার পর, তিনি খুবই চিন্তিত হতে লাগলেন। যে, আমাদের তো যান-বাহন লোকের সংখ্যায় খুবই কম।
যদি আমরা উট জবাই করে খেয়ে ফেলি। তাহলে আমাদের এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে আরো বেশি কষ্ট হবে।
হযরত উমর রা: এর বুদ্ধিমত্তা
তাই হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা: অনেকক্ষণ চিন্তা-ভাবনা করে একটা বুদ্ধি বের করলেন। যে, আমাদের মাঝে তো আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নবী সৃষ্টির সেরা মানব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা: উপস্থিত আছেন।
তিনি দোয়া করলে তো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অবশ্যই কবুল করবেন।
এবং নবীজীর দোয়ার বরকতে আমাদের খাবারের সংকট দূর হয়ে যাবে।
ফলে তিনি নবী কারীম সা: এর সমিপে নম্রতা-ভদ্রতা ও পূর্ণ আদবের সাথে আরজ করলেন।
হে আল্লাহর রাসূল সা: আমরা যদি এইভাবে আমাদের উটগুলো জবাই করে খেতে থাকি! তাহলে আমাদের বাহন তো কমে যাবে।
এবং বাকী পথ পাড়ি দিতে আরো বেশী কষ্ট হবে। আচ্চা আমরা এই কাজটি করলে কেমন হয়? বলুন তো! হে আল্লাহর রাসূল সা:।
আমাদের মাঝে যার কাছে যতটুকু খাবার সামগ্রী আছে, সকলে যদি তা আপনার সামনে একত্র করি! আর আপনি আল্লাহর কাছে তাতে বরকত দানের জন্য দোয়া করেন।
তাহলে আল্লাহ তা’য়ালা অবশ্যই তার প্রেরীত সত্য নবীর (আপনার) দোয়া কবুল করবেন এবং এতে করে আমাদের খাবারের সংকট ও দূর হয়ে যাবে।
নবী কারীম সা: এর নিকট হযরত উমর রা: এর পরামর্শটি পছন্দ হলো।
ফলে তিনি তার বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করলেন, এবং সকলকে যার কাছে যা ছিলো তা নির্দিষ্ট একটি জায়গায় জমা করতে বললেন।
তখন সকলেই নিজের কাছে থাকা সামান্য খাবারকে ঐ নির্দিষ্ট জায়গাটিতে জমা করলো।
কেউ একমুষ্টি খেজুর, কেউ বুট্টা, কেউ বা একটুকরো রুটি এনে জমা করলো।
এরপর নবী কারীম সা: আল্লাহর কাজে দু-হাত তুলে বরকতের দোয়া করলেন।
ফলে আল্লাহ তায়ালা ঐ খাবারগুলোতে এতো পরিমাণ বরকত দিলো।
যে, সকলেই নিজেদের কাছে থাকা পাত্রগুলো সব পূর্ণ করে নিয়ে যাওয়ার পরও ঐ স্থানটিতে খাবার থেকে যায়।
এরপর সকলে মিলে ঐ স্থান থেকে উদর/প্লেট ভর্তি করে খানা খান।
এটি ছিলো নবী কারীম সা: এর এক বিশেষ মোজেজা ও বরকত।
এবং তার সত্য নবী হওয়ার প্রমাণ। এখানে সাহাবায়ে কেরাম দিয়ে ছিলেন একটি বা এক মুষ্টি করে খাদ্যদ্রব্য।
আর বদলে নবীজীর বরকত পেতে নিয়ে ছিলেন পাত্র ভরে খাদ্যদ্রব্য, হুবহু একটি চকলেট দিয়ে এক কৌটা চকলেট নেওয়ার মত।
নবীজীর দুআর বরকতে আল্লাহ তা’য়ালা খাবারে এত পরিমাণ বরকত দিলেন।
এটি ছিল নবীজীর মুজেযা ও সত্যতার প্রমাণ। সর্বশেষ নবী কারীম সা: বললেন।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই-ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই এবং আমি আল্লাহ তা’য়ালার প্রেরীত রাসূল সা:।
যে কোনো ব্যক্তি এ দুই বিষয়ের (অর্থাৎ, আল্লাহ একমাত্র ইলাহ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্র রাসূল)
দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহ তা’য়ালার সাথে সাক্ষাৎ করবে তার আর জান্নাতে প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
তথ্যসূত্র: সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস ২৭)
প্রিয় ছোট্ট মনি আজ এই পর্যন্ত ছোটদের ইসলামিক গল্প ।
পরিশেষে একটি কথা হলো তুমি এই তাবুকদের ঘটনায় নবীজীর বরকত ও মোজেজার উক্ত গল্প থেকে কি শিখলে?
তুমি এই গল্প থেকে যা শিখলে তা তোমার খাতায় নোট করে রাখবে।
সবাই ভালো থেকো সুস্থ থেকো এই কামনা করি। আসসালামু আলাইকুম ।
TAGS: #Chotoder Islamic Golpo #Chotoder Golpo #Islamic Golpo #Bangla Golpo #Bagla Islamic Golpo
আরো পড়ুন ।
ইসলামে বৃদ্ধ ভাতা সর্বপ্রথম কে চালু করেন?
রিজিকের মালিক।আল্লাহ
আনেক সুন্দর একটি পোষ্ট. যা এক জন মুসলমানের পথ প্রদর্শক
This website is very greatefull for Muslims. I think it will one day be a top level group in Islamic terms.
Lesson able history of prophet.
This is a knowledgeable website
The article is very interesting, I really liked it, there would be more such articles. Waiting for new articles, like)
Thank you Soo Much For Support us
Thank you Soo Much for Motivating,
Very Good Blog and Thanks For Sharing the Last Edition of JK Lifestyle PDF Book”